তাহমিনা তার মেন্টরের প্রতি কৃতজ্ঞ
মানুষ স্বপ্ন দেখে, স্বপ্নই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে বহুদূর যেতে সহায়তা করে । স্বপ্নের সিড়িঁ বেয়ে পরিকল্পনার সুতা বুননে তাহমিনা কবির ডলির পথ চলা। আর স্বপ্ন পূরণে বি’ইয়া সবচেয়ে বড় সারথী।
১৯৯৫ সাথে বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার জন্ম গ্রহণ করেছিলেন তাহমিনা কবির ডলি (২৪)। ডলির বাবা শৈশবে মারা যান, ফলে বিশাল পরিবারে নেমে আসে আভাব নামক দানব, জীবনের সাথে যুদ্ধ করতে হয় খুব ছোট বেলা থেকেই। তারা পড়ালেখার জন্য বড় বোনেরা সহযোগীতা করেছে। সেই দুর্বিঃসহ দিন গুলো স্মৃতির পাতায় আজও উজ্জ্বল হয়ে আছে। অনেক প্রাপ্তিতে ডলি গ্রাজুয়েট শেষ করেন, কিন্তু মাষ্টার্স শেষ করার জন্য অর্থ সহযোগীতায় প্রয়োজন যার ব্যয় বহন করা পরিবারের জন্য খুব কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। এরপরও অনেকের সহযোগীতায় ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ঢাকায় এসে নিজেকে নতুন করে আবিস্কার করলেন। এই ইট পাথরের শহরে চাকরী বা টাকা উপার্জন একটি কষ্টকর ব্যাপার। তিনি উপলদ্ধী করলেন, নিজে থেকে কিছু একটা করতে হবে।
২০১৭ সালেই প্রথম দিকে বাংলাদেশ ইয়ূথ এন্টারপ্রাইজ অ্যাডভাইজ এন্ড হেল্পসেন্টার (বি’ইয়া) এর কথা জানতে পারেন। তার প্রচন্ড আগ্রহ তৈরি হয়, বি’ইয়ার একটি কর্মশালায় অংশগ্রহনের জন্য আবেদন করেন। কর্মশালায় অংশগ্রহনের সুযোগও পেয়ে যান, বি’ইয়া কতৃক আয়োজিত কর্মশালায় অংশগ্রহন করে নিজেকে নতুন রুপে আবিস্কার করলেন, তার চিন্তার আমূল পরিবর্তন হয়, নিজের যোগ্যতা আছে এটা প্রমান করার সুযোগ আছে।
পরিবারের সাথে আলোচনা করে ডলি সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন, তিনি ব্যবসা করবেন। তিনি বিভিন্ন ব্যবসার ও বিভিন্ন পণ্য দেখে, বিশ্লেষন করে তিনি দেখেছেন পাটের তৈরি নানা পণ্যে বাংলাদেশের শৌখিন মানুষের আগ্রহ অনেক। এটাই খুবই সহজলভ্য, পরিবেশ বান্ধব এই পণ্যের চাহিদাও অনেক, কিন্তু মানসম্পন্য পণ্য বাজারে নেই। পরিকল্পনা শেয়ার করলেন বি’ইয়ার সাথে। পেয়ে গেলেন একজন মেন্টর । বাবার পেনশনের কিছু টাকা নিয়ে তিনি পাট থেকে নানা শৈল্পিক পণ্য উৎপাদন শুরু করলেন।
গত দুই বছরে ডলি পাটের তৈরি এই পণ্য বাংলাদেশের নানা প্রান্তে পৌঁছে দিয়েছেন, বানিজ্য মেলা সহ নানা উৎসবে তিনি এই পণ্য সরবরাহ করছেন, আন্তর্জাতিক ভাবে তিনি এই পন্য ছড়িয়ে দিতে চান। তৈরি করতে চান মানুষের কর্মসংস্থান।
তিনি বলেন, আমি জানি আমি কোথায় যেতে চাই। আমার উৎসর্গ, আবেগে এবং প্রচেষ্টা আমাকে একদিন আমার লক্ষে পৌঁছে দিবে। কৃতজ্ঞতা জানান বি’ইয়া পরিবারকে যাদের পরামর্শে তিনি এতোদূর আসতে পেরেছেন।