মাসুদ রানার প্যাক্স লেদার
বিভিন্ন কারখানা হবে অর্জিত অভিজ্ঞতা এবং বি’ইয়া থেকে প্রাপ্ত প্রশিক্ষণ পেয়ে মাসুদ রানা (৩২) এখন মিরপুর সমবায় মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় প্যাক্স লেদার নামে চামড়াজাত পণ্যের একটি শোরুম দিয়েছেন। প্যাক্স রেদারের প্রচার ও প্রসারে মাসুদ রানা এখন যথেষ্ট আতœবিশ^াসের সাথে এগিয়ে চলেছেন।
জেলা শহর সিরাজগঞ্জ শহর থেকে চাকরির আশায় ঢাকায় আসেন **** সালে। ডিগ্রী পাশ করার পর লেখাপড়া আর এগোয়নি, উপার্জনই মুখ্য হয়ে দেখা দেয়। ছোট বেলা থেকে সংস্কৃতিমনা সৃজনশীল মাসুদ চাকরি খুঁজতে খুঁজতে এক সময় ভাবে, নিজেই কিছু করা যায় কিনা। কিছু সঞ্চিত টাকা দিয়ে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে শুরু করেন চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসা। প্রথমে জুতা, স্যান্ডেল কিনে বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করতো কিন্তু এভাবে চলছিল না। ক্রেতারা ব্রান্ড ছাড়া যেন কিছুই বোঝে না। মাসুদ ঠিক বুঝতে পারছিলো না কিভাবে এই ব্যবসাকে আরো এগিয়ে নেয়া যায়। আবার সেরকম মানুষও খুঁজে পাচ্ছিল না, যে তাকে ব্যবসার দিক নির্দেশনা দেবে। মাসুদ যেন অকুল সাগরে গন্তব্যহীন এক নাবিক।
ঢাকায় মেসবাড়িতে নিজের ঘরে বসে একদিন চোখ যায় ফেইসবুকের একটি পোষ্টে। তরুণ উদ্যোক্তা উন্নয়নে যুক্ত হবার আহবান। আর দেরি নয়, চিন্তা ছিলো “দেখেই আসি না, কি হয় বি’ইয়াতে”। তারপরের গল্পটা আজকের মাসুদ রানার আজকের প্যাক্স লেদারের গল্প, হতাশা থেকে একজন আতœপ্রত্যয়ী মাসুদ রানা হওয়ার কাহিনী। বি’ইয়াতে আসার পর মাসুদ বুঝতে পেরেছে, সকল অভিজ্ঞতাকে সার্থক করে তুলতে পারে সঠিক প্রশিক্ষণ। সেই সাথে একজন সঠিক পরামর্শদাতা থাকলে এগিয়ে যাওয়া যায় সুনির্দিস্ট পথে। বি’ইয়া’র সহযোগিতায় তৈরি করেছেন নিজ ব্যবসার ৩ বছরের পরিকল্পনা, অংশগ্রহণ করেছেন মেলায় এবং যুক্ত হয়েছেন শত শত তরুণ উদ্যোক্তার সাথে। এর ফলে মাসুদ রানা স্বপ্নকে সার্থক করার জন্য সাহস পেয়েছেন প্যাক্স লেদার নামক চামড়াজাত পণ্য তৈরি ও বিপণনের প্রতিষ্ঠান করার। বি’ইয়া’র সাথে যুক্ত হওয়ার পর মাত্র ২ বছরেই মধ্যেই আজ তার রয়েছে একটি শোরুম আছে, যেখানে মোট ১৭ জন স্থায়ী এবং অস্থায়ী কর্মচারি তার প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে। একজন ব্যবসায়িক মেন্টর ডিনি তাকে ব্যবসা সম্পর্কিত পরামর্শ দেয়, দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন, তা সম্ভব হয়েছে এই বি’ইয়া’র জন্যই।
শুধু শোরুমই নয়, প্যাক্স লেদারের নিজস্ব একটি ওয়েবসাইট ও ফেইসবুক পেইজ আছে। প্যাক্স লেদারের পণ্য দারাজসহ বিভিন্ন অনলাইসমার্খেট প্লেসে বিক্রি হচ্ছে নিয়মিত। দেশের বাইরে থেকেও পাচ্ছে পণ্যের অর্ডার। মাসুদের ভাষায় “বি’ইয়া আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে, এখন আমি জানি আমি কী করতে চাই, কিভাবে কেমন করে কাদের সহযোগিতায় করবো, এ বিষয়লো আমার কাছে পরিষ্কার, যা আগে জানতাম না। আমি আগামী ২ বছরের মধ্যে ১০০ জনের কর্মসংস্থান আর সেই সাথে প্যাক্স লেদারকে গুণগতমানসম্পন্ন চামড়াজাত পণ্যের ব্রান্ড নামে পরিণত করতে চাই।”
মাসুদ রানার এগিয়ে চলেছে তার গন্ত্যব্যের দিকে, নিজেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে।