ব্র্যান্ড কী?
কখনও ভেবেছেন কেন দুটো একই রকমের দোকানে প্রায় একই রকম স্বাদের চিকেন ফ্রাই – কিন্তু একটার চেয়ে আরেকটার দাম বেশি?
ধরা যাক, একটা দোকান কেএফসি এবং আরেকটা বিএফসি। আমাদের কমন সেন্স বলে একদম একই রকমের স্বাদ হলে যেটাতে দাম কম – সেখানেই মানুষ বেশি যাবে।
কিন্তু ঢাকার দোকানগুলো থেকে ঘুরে আসুন।
কেফসির দাম বেশি হওয়া সত্বেও সেটাতেই কিন্তু ক্রেতা বেশি।
কেন মানুষ একই জিনিসের জন্য বেশি দাম দিচ্ছে? উত্তর হচ্ছে ব্র্যান্ড।
ব্যক্তির যেমন পরিচয় থাকে তেমন ব্যবসায়রও পরিচয় থাকে। এই পরিচয়কে বলে ব্র্যান্ড।
একটার ব্র্যান্ড ইকুইটি বেশি বলে মানুষ বেশি দাম দিয়ে সেটার পণ্য কিনছে এবং তারপরেও খুশি থাকছে।
ব্র্যান্ড ইকুইটি কাকে বলে?
একটি ব্র্যান্ডের দাম সম্পর্কে মানুষের যে ধারণা তাকে ব্র্যান্ড ইকুইটি বলে।
যেমন কেএফসিকে মানুষ দামী ব্র্যান্ড হিসেবে ভাবে – এটাই তার ব্র্যান্ড ইকুইটির ফলাফল।
ভাবতে পারেন ব্র্যান্ডিং বুঝি অ্যাপেল, গুগল, মার্সিডিজ কিংবা দেশের সুপরিচিত কোম্পানিগুলোর জন্যই প্রযোজ্য। কিন্তু যে কোনো উদ্যোক্তা চাইলে শুরু থেকেই ব্র্যান্ডিং সম্পর্কে ভাবতে পারেন।
তবে এখানে উল্লেখ্য যে সব ব্যবসার ব্র্যান্ড থাকতে হবে এটা জরুরি নয়। অনেক ট্রেডিং ব্যাবসা আছে যেখানে কোটি কোটি টাকার ব্যাবসা হয় অথচ সেটার কোনো ব্র্যান্ডিং নেই, কারণ ওই ব্যবসার দরকারও নেই। তাই সব ব্যবসার যে ব্র্যান্ডিং থাকতেই হবে – এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু কেউ যদি একটা ব্র্যান্ড দাঁড়া করাতে চান তাহলে তার জন্য উচিত হবে ব্যবসার শুরু থেকেই ব্র্যান্ডিং স্ট্র্যাটেজি ঠিক করে সে অনুযায়ী কাজ করা।
এদিকে অনেক উদ্যোক্তা ব্র্যান্ডিং এবং মার্কেটিং এর মধ্যে পার্থক্য করেন না। ভেবে থাকেন শব্দ দুটি একই। তাই মার্কেটিং নিয়ে কাজ করলেই ব্র্যান্ডিং কাভার হয় বলে মনে করে থাকেন। আসলে ব্র্যান্ডিং এবং মার্কেটিং দুটি স্বতন্ত্র ধারণা।
ব্র্যান্ড হচ্ছে দাগ। কোনো পণ্য একই রকমের অন্যান্য পণ্যগুলো থেকে আলাদা হবার জন্য আপনার মনে যে দাগটা কেটে যায় এটাই ব্র্যান্ড।
ব্র্যান্ড ইকুইটি হচ্ছে একজন সাধারণ মানুষের মনে ওই ব্র্যান্ড সম্পর্কে যে ধারণাটা রাখেন সেটা। এটা কিন্তু দেখা বা ধরা যায় না, কেবল অনুভব করা যায়।
এবং এই অনুভবটা অনেক কিছুকে প্রভাবিতও করে। যেমন ব্র্যান্ড ইকুইটির কারণে পণ্যটা বেশি দামে বিক্রি করা যায় যেটা আমরা শুরুর উদাহরণে দেখেছি। ব্র্যান্ড ইকুইটির ফলে ওই ব্র্যান্ডের পেছনে থাকা কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়ে যায়। যে ব্র্যান্ডের ইকুইটি যত বেশি থাকে তার পারচেজ ফানেলটাও অনেক আরামে কাজ করে – অর্থাৎ বিক্রি বেশি হয়। আর বিক্রি বেশি মানে মার্কেট শেয়ার বেশি।
ব্র্যান্ড ইকুইটি বাড়লে কোম্পানির সোশ্যাল রেকগনিশন বাড়বে আর তখন মেধাবী ও সৃজনশীল কর্মীরা সেই কোম্পানিতে আসতে আকৃষ্ট হবে।
ব্র্যান্ড ভ্যালুর সাথে ব্র্যান্ড ইকুইটির পার্থক্য আছে। ব্র্যান্ড ভ্যালু বলতে বোঝায় একটি ব্র্যান্ড বিক্রি করতে গেলে যে দাম পাওয়া যায় সেটা। স্বাভাবিকভাবেই যে ব্র্যান্ডের ইকুইটি বেশি তার ব্র্যান্ড ভ্যালুও বেশি হবে। চলুন দেখে নিই ২০২৩ সালে পৃথিবীর সবচেয়ে দামী ব্র্যান্ডগুলো ছিল কী কী –
প্রশ্ন আসতে পারে, কোনো একটা ব্র্যান্ডকে সংজ্ঞায়িত করা হয় কীভাবে? নানা রকম পদ্ধতি আছে যেমন ইউনিলিভার ব্যবহার করে ব্র্যান্ড কী (Brand Key)।তবে জ্যাঁ নেল কাফ্রারারের ব্র্যান্ড আইডেনটিটি প্রিজম খুব ভালো একটা পদ্ধতি।
ব্র্যান্ড আইডেনটিটি প্রিজমে ছয়টি বিষয়ে লক্ষ্য রাখার মাধ্যমে একটা ব্র্যান্ডকে সংজ্ঞায়িত করা হয়।
১। বাহ্যিক রূপ
লোগো, ব্র্যান্ড কালার, ফন্ট। প্রডাক্ট হলে প্রডাক্টের ডিজাইন।
২। সম্পর্ক
ব্যবহারকারীর সাথে ব্র্যান্ডটির প্রডাক্ট বা সেবার সম্পর্ক কেমন।
৩। প্রতিচ্ছবি
ব্র্যান্ডটি কাকে তার আদর্শ ব্যবহারকারী বলে মনে করে।
৪। ব্যাক্তিত্ব
ব্র্যান্ডটি পৃথিবীর সাথে কীভাবে কমিউনিকেট করে।
৫। সংষ্কৃতি
সেসব মূল্যবোধ যার ওপরে ব্র্যান্ডটির ভিত্তি গড়ে উঠেছে।
৬। আত্মপ্রতিকৃতি
ব্র্যান্ডটি ক্রেতাদের সামনে নিজেকে কোন চরিত্র হিসেবে ফুটিয়ে তুলতে চায়।
পৃথিবীখ্যাত দুটি ব্র্যান্ডের ব্র্যান্ড আইডেনটিটি প্রিজম যদি আমরা বিচার করি তাহলে ব্যাপারটা খুব সহজেই বুঝতে পারব।
১। কোকাকোলার লাল রং, বাঁকা ফন্ট, বুদবুদ ওঠা কোল্ড ড্রিংক হচ্ছে বাহ্যিক রূপটি।
২। সম্পর্ক হচ্ছে বন্ধুর মতো।
৩। সেসব মানুষকেই কোকাকোলা আদর্শ ব্যবহারকারী মনে করে যারা পরিবারে সময় দেয়।
৪। খুব সুখী, হাসিখুশি এই টোনে কোকাকোলার সব কমিউনিকেশন যায়।
৫। শহুরে, একই সাথে অ্যামেরিকান এবং মাল্টি ন্যাশনাল এটাই কোকাকোলার সংষ্কৃতি।
৬। কোকাকোলা বললেই যেন সুখী, চমৎকার একটা চিত্র মানুষের মাথায় আসে এটাই কোকাকোলার চাওয়া।
অন্যদিকে পেপসির ব্র্যান্ড প্রিজমের দিকে যদি আমরা তাকাই তাহলে দেখব –
১। নীল ও লাল রং, গোলাকার লোগো ও ফন্ট।
২। সম্পর্ক হচ্ছে অল্প সময়ে অনেক মজা দেওয়ার কেউ।
৩। পেপসির আদর্শ ব্যবহারকারীরা হলো তরুন, বেপরোয়া।
৪। খুবই স্মার্ট, তারুণ্যমন্ডিত এবং মজার টোনে পেপসি সবার সাথে কমিউনিকেট করে।
৫। অ্যামেরিকান, বুদ্ধিমান এবং তারুণ্য নির্ভর হচ্ছে পেপসির সংষ্কৃতি।
৬। পেপসি বললেই যেন সামাজিক্ক এবং ঈর্ষণীয় একটা চিত্র মানুষের মাথায় আসে এটাই পেপসির চাওয়া।
ব্র্যান্ডিং দিয়ে বোঝায় একটা ব্র্যান্ড দাড় করানোর জন্য যে কাজগুলো করা হয় সেগুলো। পণ্য, সেবা ও ব্যবসার ব্যপারে ক্রেতার ইতিবাচক মূল্যায়নের তৈরির উপায় হচ্ছে ব্র্যান্ডিং। কোনো একটা ব্র্যান্ডের কি কি জিনিস থাকতে হয় সেটাকে ব্র্যান্ড হিসেবে দাঁড় করানোর জন্য?
ব্র্যান্ড টাচপয়েন্ট হুইল দিয়ে এই ব্যাপারগুলোর একটা সার্বিক চিত্র পাওয়া যায়।
কেনার আগে থেকেই ব্র্যান্ডিং
ব্র্যান্ডিং এর যাত্রা শুরু হয় কেনার অনেক আগে থেকেই। কোনো ব্র্যান্ড মানুষের মনে গাঁথা থাকে, কোনোটা থাকে না। আমরা প্রতিদিন সোশাল মিডিয়াতে নানা কোম্পানির পোস্ট দেখি। টিভির অ্যাড তো অনেক পুরোনো দিনের ঘটনা – এখন যুক্ত হয়েছে ইউটিউবে ভিডিও থামিয়ে দেয়া অন্য কোনো পণ্যের বিজ্ঞাপন। এছাড়াও স্ট্যাটিক বিজ্ঞাপন পাওয়া যায় পেপারে, ম্যাগাজিনে যদিও আজকাল প্রিন্টেড বিজ্ঞাপনের পরিমাণ কমে গেছে অনেকাংশে। বিজ্ঞাপনের কোনো কোনোটা আমাদের অবচেতন মনে জায়গা করে নেয়। এই যে জায়গা করে নেওয়ার কাজটা করে বিজ্ঞাপনের চরিত্রগুলো। টিভি ভিডিও কমার্শিয়ালের ক্ষেত্রে কথা বা সুরও প্রভাব ফেলে। আমরা খুব সহজেই চিনে ফেলি গ্রামীনফোনের ব্র্যান্ড সাউন্ডটিকে।
কখনও কোনো পণ্য কিনতে গেলে আমরা গুগলে সার্চ করি। কিংবা কারো কাছ থেকে শুনে সেই কোম্পানির ওয়েবসাইটে ঢুঁ মারি। ওয়েবসাইটের গঠন – যে পণ্যটা খুঁজছিলাম তা সহজে পাওয়া যায় কিনা – সেখানে সুন্দর করে দরকারী তথ্যগুলো পাওয়া যাচ্ছে কিনা – এ থেকে আমাদের মনে ওই ব্র্যান্ড সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি হয়। যাদের ওয়েবসাইট নেই কিংবা থাকলেও খুব নিম্নমানের সেই ব্র্যান্ড সম্পর্কে আমরা বুঝে যাই এরা যুগের সাথে তাল মেলাতে পারেনি।
হয়তো মাসজিদের বাইরে বিলি করা কোনো একটা ফ্লায়ার কিংবা পেপারের ভেতরে পাওয়া ব্রোশিউর – এগুলো সবগুলোই কোনো না কোনো ব্র্যান্ডের খবর আমাদের কাছে পৌঁছে দেয়। ডিজাইন করা ফ্লায়ার, ব্রোশিউর, ব্যানার – যাবতীয় প্রিন্টেড ম্যাটেরিয়ালকে মার্কেটিং এর পরিভাষায় বলা হয় কোল্যাটেরাল।
কেনার সময় ব্র্যান্ডিং
যখন কোনো একজন ক্রেতা একটা পণ্য কেনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে তখন সে হয় দোকানে যায় অথবা ওয়েবসাইটে। যা কিনতে চাচ্ছে সেটার ডিসপ্লে অফলাইনে হোক বা অনলাইনে – ক্রেতার মনের ওপর প্রভাব ফেলে। এ কারণে সুপারশপগুলোতে প্রডাক্টগুলো কোনটা কোন তাকে থাকবে সেটা নিয়েও বিডিং হয়। যেমন আই লেভেলে র্যাকে রাখতে হলে কোম্পানিগুলোকে বাড়তি ভাড়া গুণতে হয় কারণ চোখের সামনে বার বার কোনো পণ্য পড়লে সেটা যে শুধু কেনার সম্ভাবনা বাড়ায় তাই নয়, টপ অফ দ্যা মাইন্ডে থাকার সম্ভাবনাও বাড়ায়। কিছু কিছু প্রডাক্ট কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতারা সেটার পারফরমেন্স যাচাই করে নেয় – যেমন সুগন্ধীর ক্ষেত্রে ঘ্রাণ নিয়েই তারপর কেনেন ক্রেতারা। টিভি মনিটরের ক্ষেত্রে ইমেইজ কোয়ালিটির সাথে দাম মিলিয়ে নেন প্রফেশনালরা। আর গাড়ির ক্ষেত্রে টেস্ট ড্রাইভ করে গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা দেয়ার সংষ্কৃতি অনেক পুরোনো।
বর্তমান সময়ে অনলাইনে পণ্য কেনার হিড়িক বেড়ে গেছে দেখে ডেলিভারি টাইম এবং কী অবস্থায় পণ্যটা বাসায় পৌঁছাচ্ছে সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডেলিভারি দিতে দেরি হলে ব্র্যান্ড সম্পর্কে তিক্ত অভিজ্ঞতা তৈরি হয় যেটা পরে অনেক কষ্টেও দূর করা সম্ভব হয় না।
কেনার পরে ব্র্যান্ডিং
একটা ব্র্যান্ডের আসল পরীক্ষা শুরু হয় কেনার পর। নন ব্র্যান্ডেড পণ্য মানুষ কেনে না তার মূল কারণ কেনার পরে কোনো সমস্যা হলে বিক্রেতা কোনো দায় নেয় না। কিন্তু একটা ব্র্যান্ডকে ভালো মানের পণ্য দিতে হয় কারণ সেটার মান ভালো না হলে কাস্টমার আফটার সেলস সার্ভিসে অভিযোগ করবে। পণ্য রিপ্লেস দিতে গেলে খরচ অনেক বেড়ে যায়। আর একটা নতুন পণ্য
কিনেই আবার ঠিক করতে দেয়া ক্রেতার মনে মোটেই কোনো ভালো ধারণা তৈরি করে না। ক্রেতারা খুব সামান্য জিনিস – যেমন বিল বা ডেলিভারি চালানটার ডিজাইন কেমন – সেটা কি হাতে দিয়ে দেয়া হয়েছে নাকি একটা খামে সুন্দর করে দেয়া হলো – এসব ব্যাপারও খেয়াল করে। কোনো কারণে যদি পণ্য খারাপ হয়েও যায় তাহলে কাস্টমার কেয়ারের ভালো ব্যবহার, পণ্য পরিবর্তন করে দেয়া – কাস্টমারের মনে ব্র্যান্ড সম্পর্কে সুউচ্চ ধারণা তৈরি করে।
ব্র্যান্ডগুলোর বড় একটা চাওয়া থাকে ক্রেতা যেন হারিয়ে না যায়। একজন ক্রেতা প্রতিবছর টিভি কিনবে না এটা আমরা সবাই বুঝি। কিন্তু যখনই কিনবেন বা কাউকে কিনতে বলবেন তখন যেন নতুন কোনো ব্র্যান্ড না খোঁজেন সেজন্য থাকে লয়ালটি প্রোগ্রাম। নানারকম গিফট, পয়েন্ট, রেফারেল সিস্টেম – নানা কিছুর মধ্যে দিয়ে ব্র্যান্ডগুলো চায় ক্রেতাকে নিজের অ্যাডভোকেট বানিয়ে ফেলতে যেন ক্রেতা নিজেই ব্র্যান্ডের প্রমোশনে কাজ করেন পয়সা ছাড়াই।
উপসংহার
একটি ব্র্যান্ড বহুদিনের সাধনাতে তৈরি হয়। ব্র্যান্ড গঠনের জন্য খুবই জরুরি হচ্ছে ধারাবাহিকতা বা কনসিস্টেন্সি থাকা। ব্র্যান্ড ম্যানেজার পরিবর্তনের সাথে সাথে যদি ব্র্যান্ড ইমেজেরও পরিবর্তন ঘটে তাহলে সর্বনাশ। এ কারণে যারা ব্র্যান্ড তৈরি করতে চান তাদের উচিত একটা ব্র্যান্ড বুক তৈরি করা যা নির্ধারণ করে দেবে এই ব্র্যান্ডের কমিউনিকেশন কেমন হবে, ডিজাইন কেমন হবে, টোন কি হবে। এই ব্র্যান্ড বুকই মার্কেটিং এবং ব্র্যান্ড টিমকে গাইড দেবে করণীয় এবং বর্জনীয় সম্পর্কে। একজন নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে যদি আপনি বড় কোনো ব্র্যান্ড তৈরি করার স্বপ্ন দেখেন তাহলে এই হিসেবে আপনাকে কিন্তু প্রথম দিন থেকেই কাজ করতে হবে। বাংলাদেশে গড়ে উঠুক বিশ্বখ্যাত সব ব্র্যান্ড এই কামনায় এই ব্লগটি যদি আপনার কাজে লেগে থাকে তাহলে সমমনাদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না যেন।