প্রোডাক্ট প্রাইসিং কৌশল কেন ব্যবসার শুরুতেই জানা উচিৎ  

পণ্যের মূল্য বা দাম নির্ধারণ করা , মানে প্রোডাক্ট প্রাইসিং কৌশল হচ্ছে একটা ব্যবসার খুবই সংবেদনশীল অংশ। প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রাইস এতো বেশী হওয়া যাবে না যাতে গ্রাহক মুখ ফিরিয়ে নেয়। আবার এতো কম হওয়াও যাবে না যাতে নিজের শ্বাস প্রশ্বাসের কোন জায়গা না থাকে। ব্যবসাটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার মতো শক্তি আসেই মূলধন থেকে। আর মূলধন জমবে তখনই যখন বিক্রির পরে হাতে কিছু বাড়তি লাভের টাকা থাকে। 

তাই অতিরিক্ত দাম, আর কম দাম – এ দুটোর মাঝামাঝি একটা জায়গা নির্ধারণ করতে হবে প্রোপার প্রাইসিং এর জন্য। টেক্সট বইয়ের কোথাও প্রাইস নির্ধারণের কোন সূত্র দেয়া নেই। ফ্যাক্টরগুলো বসিয়ে দিলাম আর প্রাইস বের হয়ে আসলো, ব্যাপারটা এরকম না, বরং কিছু ইন্ডিকেটর বলা আছে যেগুলো বিবেচনায় নিয়ে আপনাকেই আপনার পণ্যের প্রাইস নির্ধারণ করতে হবে। টেক্সট বইয়ে বর্ণিত এবং বাস্তব অভিজ্ঞতায় অর্জিত এরকমই কিছু ইন্ডিকেটর আজকে আলোচিত হলো। যে পয়েন্টগুলো অধিকাংশ বিশেষ করে নতুন ব্যবসায়ীরা মিস করে, তাদের জন্য সামনে তুলে ধরা হলো। 

১/ প্যাকেজিং খরচ :

প্রোডাক্ট শুধু দিলেই হয় না; সেটা একটা মোড়কে দিতে হয়। এটাতে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের নাম-লোগো ইত্যাদি ব্র্যান্ডিং থাকে। এটি পণ্যটাকে বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া বা নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। একটা পণ্য প্যাকেজিং করতে কত খরচ হচ্ছে সেটা ভালোভাবে হিসাব করতে হবে। তারপর সেটাকে প্রোডাক্টের প্রাইসে ঢোকাতে হবে।

২/ ওভারহেড খরচ :

একটা ব্যাবসা চালানোর বহুরকম খরচ আছে যেটা সরাসরি প্রোডাক্টের প্রাইসিং এ আসে না। যেমন দোকান বা অফিস ভাড়া, গ্যাস-পানি-ইলেক্ট্রিসিটির বিল। মাস গেলে কর্মীদের বেতনও দিতেই হবে। এগুলো সব ওভারহেড খরচে আসবে। এই খরচগুলো লিখে রাখতে হবে এবং প্রতি মাসে সেলস টার্গেট ঠিক করে এই ওভারহেড খরচ প্রত্যেকটা পণ্যের দামের মধ্যে ধরে দিতে হবে।  

৩/ লাভ :

যে যতো কথাই বলুক ব্যাবসা করতে নামার সব চেয়ে বড় মোটিভেশান হলো টাকা। ব্যবসার সপ্তাহে ৭ দিন, দিনে ২৪ ঘন্টা ব্যস্ত থাকাসহ নানাবিধ যন্ত্রণার ক্ষতকে সারিয়ে তুলতে পারে টাকা অর্থাৎ প্রফিট। প্রাইসিং করার ক্ষেত্রে প্রথমত আপনার যথেষ্ট লাভ রাখতে হবে, যাতে আপনি মোটভেটেড থাকেন। আপনার পরিবার চলার মতো আয় এখান থেকে নিশ্চিত করতে হবে। ব্যাবসা ছেড়ে দেয়া বা ব্যাবসা পরিবর্তন করা এমন অনেককে বলতে শোনা যায়, “ভাই এই ব্যবসায় লাভ ভালো না তাই ছেড়ে দিয়েছি”। সুতরাং প্রাইসিং করার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত প্রফিট থাকার বিষয়ে নজর দিতে হবে।

৪/  রিসেলারের প্রফিট :

রিসেলারের প্রফিট নির্ধারণের জন্য প্রোডাক্ট প্রাইসিং কৌশল জানা থাকা জরুরী

একা একা কখনো একটা ব্যাবসা বড় করা যায় না, বিশেষ করে প্রোডাকশন ব্যাবসা। অন্যের সহযোগিতা আপনাকে নিতেই হবে। প্রায় প্রত্যেকটা বড় বড় কোম্পানি ডিলার ডিস্ট্রিবিউশন মডেলে কাজ করে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো অন্যের সাথে নিজের লাভের অংশ ভাগাভাগি করে; যদিও এদের ডাইরেক্ট সেলস করার যথেষ্ট সামর্থ্য আছে। কারণ তারা জানে একা একা ফুটবল খেলা যায় না, বিশ্বসেরা মেসিও যদি দলে থাকে। খেলতে নামলে প্রোপার একটা টিম দরকার। 

আমাদের অধিকাংশ উৎপাদকরাই অনেক সময় সঠিক প্রোডাক্ট প্রাইসিং কৌশল না মেনেই  এমন দাম ঠিক করেন যাতে রিসেলার বা পাইকারকে দেয়ার মতো কিছু থাকে না। প্রোডাক্ট সেল করা একটা বিজনেস প্রসেসের সবচেয়ে কঠিন কাজ। সেই কাজটা যারা করছে তাদেরকে অবশ্যই ভালো একটা মার্জিন শেয়ার করতে হবে, তাদেরকে মোটিভেটেড রাখার জন্য। রিসেলারের প্রফিট মার্জিন অবশ্যই প্রাইসিং এ এ্যাড করা থাকতে হবে।

৫/ কাঁচামালের দাম :

কিছু প্রোডাক্টের, বিশেষ করে কাঁচা পণ্যের ক্ষেত্রে একটা সিজন অফসিজন থাকে। অফসিজনে বা কোনো কারণে যদি চাহিদা বেড়ে গিয়ে বাজারে যোগানের সংকট তৈরি হয়, তবে সেই প্রোডাক্টের প্রাইস বেড়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। 

যারা কাঁচা পণ্য নিয়ে কাজ করবেন প্রাইসিং এর ক্ষেত্রে তাদের এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। সিজনে এক ধরনের প্রাইস রাখলাম, অফ সিজনে আরেক রকম – এরকম প্রাইসিং হয় না। যতোই আপনি গ্রাহকের সাথে কথা বলেন বা বোঝান; সুইং প্রাইসিং – মানে একেক সময় একেক প্রাইস রাখা যাবে না। এতে আপনার কাষ্টমার দ্বিধাগ্রস্ত হবে এবং সিজনে আপনার পণ্য স্টক করে রাখার বড় একটা সম্ভাবনা থেকে যায়। ফলে দেখা যাবে আপনি সিজনেই প্রোডাক্ট সংকটে থেকে বসে থাকবেন এবং বাকি পুরোটা সময় মাছি মারা ছাড়া উপায় থাকবে না। সুইং প্রাইসিং ভালো স্ট্র‍্যাটেজি হলে দেখতেন বড় কোম্পানিরাই এটা ফলো করছে!

৬/ প্রতিদ্বন্দ্বীর দাম :

যারা নতুন ব্যাবসা করছেন, প্রোডাক্টের প্রাইসিং কতো হবে সেটা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন তাদের জন্য দাম নির্ধারণের অন্যতম নিয়ম হলো প্রতিদ্বন্দ্বীর দাম অনুসরণ করা। আপনার কম্পিটিটর দীর্ঘদিন ধরে এই সেক্টরে ব্যবসা করছে; তিনি ব্যবসার ফাঁকফোকর গুলো জানেন। প্রাইস ইন্ডিকেটরগুলো বিশ্লেষণ করেই প্রাইস নির্ধারণ করেছেন। আপাত দৃষ্টিতে প্রফিট মার্জিন অনেক বেশী মনে হলেও এমন কিছু ফ্যাক্টর রয়েছে যেটা হয়তো আপনি বিবেচনায় আনেননি, আপনার কম্পিটিটর সেটা জানেন। তাই নতুনদের ক্ষেত্রে কম্পিটিটরের প্রাইস ফলো করা উত্তম সমাধান।

এছাড়াও মার্কেট ব্যালেন্স করারও ব্যাপার আছে। আপনি নতুন নেমেছেন, আপনার ফিক্সড খরচ কম। ফ্যাক্টরী সেটআপ নেই, অফিস নেই, এমপ্লয়ি খরচ নেই, রিসেলার নেই, বাড়িতে বসে বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসে ব্যাবসা করছেন; আর ভাবছেন আপনার কম্পিটিটিটর মানুষের গলা কাটছেন, আর আপনি কম প্রাইস রেখে খুব মহৎ কাজ করছেন। 

জ্বি না, সেক্টরটা নষ্ট করা ছাড়া আপনি আর কিছুই করছেন না। একসময় আপনি যখন আরকটু বড় হবেন তখন আপনার এই খরচগুলো হবে, তখন এইগুলো কীভাবে মেটাবেন? কাষ্টমারও আপনাকে এতো টাকা দিবেন না, কারণ আপনি ততদিনে মার্কেট নষ্ট করে ফেলেছেন। এরকম আচরণ অনেক বড় একটা ক্রাইম। কারণ এতে আপনি একা ডুববেন না বরং পুরো সেক্টরটাকে সাথে নিয়ে হাবুডুবু খাবেন।

৭ / ভবিষ্যৎ :

ব্যবসার শুরুতে সবার ফিক্সড খরচ কম থাকে। আউটলেট নেই, দোকান নেই, লাইসেন্সিং ফি’স দিতে হয় না। কম লাভে খুবই টাইট একটা প্রাইস সেট করলেন প্রোডাক্টের। এখন আপনার হয়তো এই খরচগুলো নেই একসময় কিন্তু হবে। চিরকাল আপনি ছোট থাকবেন না। ছোট থাকার জন্য কেউ ব্যবসায় নামে না; সবার একটা বড় গোল থাকে। 

আপনি যখন বড় হতে যাবেন তখন আপনার এই খরচগুলো হবে, কাজেই আগে থেকেই এইগুলো মাথায় রেখে সঠিক নিয়ম মেনে প্রোডাক্ট প্রাইসিং কৌশল করে দাম নির্ধারণ করা উচিত। অন্যভাবে বলা যায়, আপনার ব্যাবসা থেকে যদি যথেষ্ট ক্যাশফ্লো জেনারেট না হয়; আপনি বড় হবার সুযোগ পাবেন না; একটা চক্রেই ঘুরপাক খেতে হবে। আর বার বার অকারণে দাম বাড়াতে থাকা কখনই ভালো স্ট্র‍্যাটেজি নয়। এখন দাম কম, পরে বেশি – এতে আপনার ব্রান্ড ভ্যালু মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মানুষ বলবে, একটু নাম হয়ে গেলে কীভাবে এরা দাম বাড়ায়! 

৮/ টার্গেট কাষ্টমার :

আপনি কোন সেগমেন্টে ব্যাবসা করছেন – আপনার টার্গেট কাস্টমার কারা?

যাদের কাছে প্রোডাক্ট বিক্রি করছেন – তাদের লাইফস্টাইল, অভিরুচি, ইনকাম এইগুলো প্রাইসিং এর ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে। আপনার টার্গেট কাস্টমার যদি নিম্ন আয়ের মানুষ হয় বা বেশি প্রাইস সেনসিটিভ হয়; তবে দাম একটু কম নির্ধারণ করতে হবে। আর টার্গেট কাস্টমার যদি একটু এলিট হয়, কোয়ালিটি প্রোডাক্ট চায়; প্রাইস সমস্যা না, তবে আপনি প্রিমিয়াম প্রাইস চার্জ করতে পারেন। এই সেগমেন্টে লো প্রাইস প্রোডাক্ট নিয়ে প্লে করতে গেলে ধরা খেতে হবে। তবে এর মানে এই নয় আপনি প্রিমিয়াম প্রাইসিং দিয়ে আকাশ পাতাল লাভ করে ফেলবেন। প্রিমিয়াম প্রাইস পেতে গেলে আপনাকে প্রিমিয়াম খরচ করতে হবে। প্রোডাক্ট প্যাকেজিং হতে হবে প্রিমিয়াম, সার্ভিস হতে হবে প্রিমিয়াম। আমি একটা অনলাইন শপ চিনি যারা তাদের প্রোডাক্ট ডেলিভারি দেয় মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ির মাধ্যমে স্যুটেড ব্যুটেড ডেলিভারি ম্যান দিয়ে। প্রোডাক্ট প্রাইসও সেইরকম, সার্ভিসও সেইরকম।

৯/ ইনভেনটরী :

ছোট ব্যবসায়ী – যারা অল্প প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করেন, তারা জানেন প্রোডাক্ট নষ্ট হবার কষ্ট; প্রোডাক্ট আটকে থাকার যন্ত্রণা।কাঁচামাল আনার সময় নষ্ট হয়, প্যাকেজিং এর সময় নষ্ট হয়; ডেলিভারি দেয়ার সময় নষ্ট হয়। এই খরচটা প্রাইসিং এ এ্যাড করতে হবে। আর প্রোডাক্ট আটকে থাকলেও কিন্তু খরচ বাড়তে থাকে। ধরেন আপনি ১০ মন মধু কিনে গোডাউনে বা অফিসে রাখলেন। গোডাউন ভাড়া হলো ৫ হাজার টাকা মাসে। মধুটা ৬ মাস আটকে থাকলে মধুর খরচ বেড়ে দাঁড়ালো ৩০ হাজার টাকা, প্রতি মনে ৩ হাজার, প্রতি কেজিতে প্রায় একশ টাকা। এই টাকাটা কোথা থেকে আসবে? আপনার প্রাইসিং থেকে।

১০/ বাকি | প্রোডাক্ট প্রাইসিং কৌশল  নির্ধারণের একটি অবহেলিত দিক

একাউন্টিং এ একটা টার্ম আছে, “কস্ট অফ ফান্ড”। অর্থ্যাৎ টাকা আনার, টাকা সংগ্রহ করার কিন্তু একটা খরচ আছে। খরচ করে, কষ্ট করে আনা টাকাটা যখন অন্যের কাছে আটকায় থাকে, তখন কিন্তু তা একই সাথে বেদনাদায়ক, দুশ্চিন্তার উদ্রেককারী ও খরচ আনয়নকারী। 

বাংলাদেশের জন্য ব্যবসার অভিশাপ হলো বাকি ব্যাবসা। বাকি ব্যাবসা, ব্যবসায়ীর ঘুম কেড়ে নেবার জন্য যথেষ্ট। মার্কেটে টাকা যতো পড়ে থাকবে, অপারেটিং খরচ আপনার তত বাড়তে থাকবে। এই বাকির খাতাই কিন্তু একাউন্টিং এর ভাষায় একাউন্টস রিসিভেবল এবং ব্যাড ডেট (Bad debt) হলো সেই বাকি যা পাবার সম্ভাবনা জিরো। অতএব প্রাইসিং করার সময় মার্কেটে যা টাকা বাকি পড়ে আছে সেটার একটা অংশ ফিরে আসবে না – এটা ধরে প্রডাক্টের প্রাইসিং করতে হবে।

১১/ সরকারী খরচ :

আগে একসময় ২০০-৩০০ টাকায় ট্রেড লাইসেন্স করা যেতো, এখন অনেক টাকা লাগে। শুধু ট্রেড লাইসেন্স নয়, বিএসটিআই, ট্রেডমার্ক – এইসব লাইসেন্সিং করতে প্রতিবছর বহু টাকা খরচ হয়। ব্যবসা একটু বড় হলেই দিতে হবে ট্যাক্স এবং ভ্যাট। এই খরচগুলো বিজনেস থেকে উঠে আসতে হবে। এই খরচটা প্রোডাক্টের দামের সাথে যোগ করতে হবে।

১২/  অনলাইনে ডেলিভারি চার্জ :

অনলাইনে যারা ব্যাবসা করেন তারা জানেন, ডেলিভারি খরচ বাবদ অনেকগুলো টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। ডেলিভারি চার্জ যেমন বেড়ে গেছে আবার কাস্টমারের কাছেও খুব বেশী চার্জ করা যায় না সেল কমে যাবে বলে। এছাড়াও কন্ডিশনে মাল পাঠালে সেখানে একটা সময় টাকা আটকে থাকে। কন্ডিশন চার্জ কাটে, থার্ড পার্টি কুরিয়ারের কাছেও কিছু টাকা আটকে থাকে। এই খরচগুলো, লসগুলো, ডেলিভারির ভর্তুকিগুলো প্রোডাক্ট প্রাইসিং এ যোগ করতে হবে। এছাড়াও ডেলিভারির ভর্তুকি প্রাইসিং এ এ্যাড করা থাকলে আপনি কাস্টমারকে সাইকোলজিক্যাল বেনিফিট দিতে পারবেন। কম ডেলিভারি চার্জ, ফ্রি ডেলিভারি – এইগুলা কাস্টমারকে দিতে পারবেন। কাস্টমার হ্যাপি থাকবে।

১৩/  অন্যান্য প্রডাক্টের প্রফিট মার্জিন :

মতিঝিলে একটা খাবারের দোকান আছে যেখানে খুব অল্প টাকায় গরুর কালাভুনা পাওয়া যায়। অন্য দোকানে যেখানে গরুর ভুনা ১৪০-১৫০, সেখানে এই দোকানে গরুর ভুনার দাম ১১০/- টাকা। কিন্তু তাদের অন্য প্রোডাক্টগুলোর দাম রেগুলার, অন্য দোকানের মতোই। এই গরুর ভুনা দিয়ে তারা কাস্টমার এ্যাট্রাক্ট করে, প্রফিট করে অন্য প্রোডাক্ট দিয়ে।

আপনার যদি এরকম অনেক প্রোডাক্ট থাকে একটিকে রাখতে পারেন পিভট প্রোডাক্ট হিসেবে যেটাতে একটু কম লাভ করেও অন্যান্য প্রোডাক্টের মাধ্যমে প্রফিট ব্যালেন্স করবেন। তবে এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে কোনোভাবেই যেন মার্কেট নষ্ট না হয়, অন্যরা আমার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

মোটামুটি এই হলো প্রাইসিং এর ক্ষেত্রে বিবেচনাযোগ্য কিছু ফ্যাক্টর বা ইন্ডিকেটর। এর বাইরে ব্যাবসা ভেদে, এলাকা ভেদে, মানুষ ভেদে কিছু পয়েন্ট যোগ বা বিয়োগ হতে পারে। আপনিই আপনার ব্যবসাকে ভালোভাবে জানেন, আপনাকেই নির্ধারণ করতে হবে কোন পয়েন্ট গুলো আপনার ক্ষেত্রে খাটে আর কোন গুলো বাদ যাবে। এই চিন্তার ভিত্তিতে আপনার নিজেকেই প্রাইস নির্ধারণ করতে হবে। 

আপনার খরচগুলো উঠে আসবে, মার্কেট ব্যালেন্স থাকবে, আপনার নিজের চলার মতো, মোটিভেটেড হওয়ার মতো যথেষ্ট ইনকাম হলে এবং কাস্টমারের কাছে ভ্যালু অনুযায়ী সেটা গ্রহণযোগ্য হলে সেটাকেই বলা যায় প্রোপার প্রাইসিং। প্রোপার প্রাইসিং আপনার নিজের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি পুরো ইন্ডাস্ট্রির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। অতএব প্রাইস নির্ধারণে খুবই সচেতন হতে হবে, সাবধান হতে হবে।

মূল লেখক :

সাগর হাসনাত। 

এমবিএ, বিবিএ – আইবিএ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা : আহলান, ব্যাগেজিং, জোশ গিয়ার

 

সম্পাদনা :

B’Yeah Team